জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই,বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়-গয়েশ্বর

বিএনপি নিউজ ২৪ প্রতিবেদক:বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, “জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে আওয়ামী লীগের ভাগ্যে ৩০টির বেশি আসন জুটবে না।”তিনি বলেন, “জামায়াত জোট থেকে বের হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বললে পরের দিন যুদ্ধাপরাধের ট্রাইবুন্যালের প্রধান বিচারককে বরখাস্ত করা হবে।” সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃবহাল’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ লেবার পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মহানগর সমন্বয়কারী আহসান উল্লাহ শামীম।

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, “ইসি (নির্বাচন কমিশনার) আজ প্রশ্নবিদ্ধ হবে কেন? তার জন্মই তো প্রশ্নবিদ্ধের মধ্য দিয়ে। ঢাল নেই, তলোয়ার নেই- তার নাম নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সব কিছুই নির্ভর করছে সরকারের চাওয়া-পাওয়ায়।”তিনি বলেন, “এর আগে আমরা দেখেছি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অনেক বিচারপতি অনেককে হাই কোর্টে হাজির করান। এখন সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করলো- এটা বিচারপতিরা দেখেন না। বর্তমান আদালতে কোনো মামলায় সরকার হারে না। এতে প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। তারা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত।”তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জের মতো ৫৪ হাজার বর্গমাইলে লাখ লাখ ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কাল যেভাবে র‌্যাব-পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় নির্বাচনে সেটা সম্ভব নয়।”বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে জোড়ালো ভূমিকা ছিল জামায়াতের। জামায়াতের বন্ধুদের বলবো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যেভাবে ভূমিকা রেখেছিলেন ঠিক একইভাবে এটাকে রক্ষার জন্য রাজপথে থাকবেন।”

তিনি বলেন, “গওহর রিজভী হিন্দু না মুসলমান বোঝা যায় না। আগে কখনো তার নাম শুনিনি। তিনি নাকি সোনিয়া গান্ধীর বোনের জামাই। তিনি হলেন, সরকারের সবচেয়ে বড় পরামর্শক। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইমাম এইচটি ইমাম আর মশিউর রহমান শেখ হাসিনার উপদেষ্টা নয়, এরা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ কছে। আর আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাও আমাদের নয়। এরাও বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার একটি অংশ।”নাসিক নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের নেতাদের শিক্ষণীয় বিষয় আছে। শামীম ওসমান গডফাদার। তাকে জনগণ বেছে নেয়নি। এই নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র সব ভোটার সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজ চায় না।”জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, “কী অজানা কারণে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। প্রমাণ করা হয়েছে আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনকে এটার পক্ষে দাঁড় করানো আত্মঘাতী হবে।”তিনি বলেন, “আগামী দিনে আমরা শুনবো, নারায়ণগঞ্জে সেনাবাহিনী যায়নি, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ইভিএমও ব্যবহার করা যাবে। এ ধরণের কথা জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।”তিনি বলেন, “আমাদের ইতিহাসে সর্বপ্রথম একটি নির্বাচিত সরকার একটি রাজনৈতিক দলের সেক্রেটারি জেনারেলকে ডাণ্ডাবেরী পরিয়েছে। আমি কাল দেখে এসেছি তাকে একজন পুলিশ অফিসার অত্যাচার করেছে। ওই পুলিশ অফিসারের নামও আমরা জানি।”তিনি বলেন, “একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, যাদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে সেই দলের কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। এটার পরিণতি কী হতে পারে তা বুঝতে হবে।”ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার সারা জীবন চলবে না। এটা আমরাও স্বীকার করি। কিন্তু আগামীতে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনকে উদাহরণ দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে পরিণতি ভালো হবে না।”

তিনি বলেন, “জনগণকে বোকা মনে করবেন না। এ দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে পারে তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিন। জনগণ নির্বাচিত করলে ক্ষমতায় আসবেন। কিন্তু জনগণের রাস্তায় নামতে হয়- এমন কোনো কাজ করবেন না।”অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী প্রমুখ।

 


 

Free Web Hosting