লোকমান হত্যার জন্য ক্ষমতাসীন দলের কোন্দলকে আড়াল করতেই খায়রুল কবীর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে – বিএনপি

বিএনপি নিউজ ২৪ প্রতিবেদকঃ নরসিংদীর মেয়র লোকমান হত্যার জন্য ক্ষমতাসীন দলের কোন্দলকে দায়ী করে বিএনপি বলছে, তা আড়াল করতেই খায়রুল কবীর খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খোকনকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মুখোশধারী ব্যক্তিদের গুলিতে নিহত হন নরসিংদী পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেন। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য খোকনকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, “পত্র-পত্রিকায় ও নিজস্ব সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কমিটি গঠন নিয়ে এক মন্ত্রীর সঙ্গে অন্তর্দ্বন্দ্বের ফসল পৌর মেয়র হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী ধ্বংসযজ্ঞ। নরসিংদী জ্বলছে, অথচ সরকার নির্বিকার।”
“উল্টো বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকনকে কোনো মামলা ছাড়া ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। এটা সরকারের গভীর চক্রান্ত,” বলেন তিনি। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমানের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর দ্বন্দ্ব চলছিলো। সেদিকেই ইঙ্গিত করেন রিজভী।
লোকমান হত্যাকাণ্ডের পর শহরের ডাকবাংলো ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগকর্মীরা। রাজু শহরে গেলে এ ডাক বাংলোয় থাকেন। এছাড়া রাজুর ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িও ভাংচুর হয়েছে।
ডাকসুর সাবেক জিএস খোকনের মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, “ট্রেনে আগুন, সার্কিট হাউস ভাংচুরসহ পুরো জেলায় যে তাণ্ডব চলছে, সেদিকে সরকারের কোনো নজর নেই। বরং তারা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছে।”
যে মন্ত্রীকে নিয়ে অভিযোগ করছেন, তার গ্রেপ্তার দাবি করছেন কি না- প্রশ্ন করা হলে রিজভী বলেন, “এই ঘটনা ক্ষমতাসীন দলের বিবাদের জের। এর সঙ্গে যে বা যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ক্ষমতাসীন দলকে বলবো, হানাহানি বন্ধ করুন। বিরোধী দলকে জড়ানোর চক্রান্ত থেকে বিরত থাকুন।”

লোকমান হত্যার পরদিন এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়ার ঘটনার পরও সরকার নিষ্ক্রিয়তা তুলে ধরে গত বছর সিরাজগঞ্জে ট্রেনে আগুনের পর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের তুলনা করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “তখন ট্রেন দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি বগিতে আগুন দিলে আমাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে সরকার মামলা দিয়েছিলো। কিন্তু এগারসিন্দুর ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার দুদিন চলে গেলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি।”
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ তথ্য ও গবেষণা সস্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ।

 

Free Web Hosting