নরসিংদীতে তিনদিনের হরতাল ডেকেছে জেলা ছাত্রলীগ

বিএনপি নিউজ ২৪ প্রতিবেদক,নরসিংদী: নরসিংদীর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় নরসিংদীতে তিনদিনের হরতাল ডেকেছে জেলা ছাত্রলীগ।মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদী শহরের মধ্য কান্দাপাড়াস্থ পৌরসভার কার্যালয় সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের ভিতরে  লোকমান হোসেনকে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দ্রুত তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত সোয়া ১১টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় রাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী মহাসড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার থেকে নরসিংদীতে তিন দিনের হরতাল আহ্বান করেছে ছাত্রলীগ।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে মেয়র লোকমান হোসেন দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। হঠাৎ ৫-৭ জনের একদল মুখোশধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী অফিসের ভিতরে ঢুকে খুব কাছে থেকে তাকে ৪ রাউন্ড গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মেয়র লোকমান হোসেনের বুকে, পেটে ও মাথায় চার রাউন্ড গুলি করা হয়েছে। শহরে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শ’ শ’ লোক রাস্তায় নেমে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একই সঙ্গে শহরে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করে। বাসাইল, ব্রাহ্মণদী, ভোলানগর, বিলাসদি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় তারা জেলা পরিষদের সার্কিট হাউজে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। নরসিংদী রেল স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করে সেখানেও ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মধ্যরাতের পর স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা। রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এসএম কাইয়ুম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম বুধবার থেকে ৩ দিনের হরতাল ঘোষণা করেন। এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত লোকমান হোসেনকে নিয়ে আসা হলে শ’ শ’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সেখানে ভিড় জমান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাসপাতাল এলাকায় তিন প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক হাসপাতালে ছুটে যান। রাত সোয়া ১১টায় ঢাকা মেডিকেলের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নাজমুল শাহীন, ডা. হরিদাস সাহা এবং জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।মেয়র লোকমান হোসেনের মৃত্যুতে নিহতের পরিবারসহ নরসিংদীতে চলছে শোকের মাতম।নিহতের বোন সাজিয়া আফরিন রোজি জানান, “আমার ভাইয়ের কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটালো আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ হত্যার বিচার চাই।”নরসিংদীর জনপ্রিয় নেতা ছিলেন লোকমান হোসেন। শ্রেষ্ঠ মেয়র হিসেবে দুইবার স্বর্ণপদক পান তিনি।

 

Free Web Hosting