জামায়াত যদি আজ আপনার পাশে থাকতো তাহলে কোনো বিচার হতো না–ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া

বিএনপি নিউজ ২৪ প্রতিবেদকঃ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, “জামায়াত যদি আজ আপনার পাশে থাকতো তাহলে আপনি কোনো বিচার করতেন না। আপনার পিতা ৭৩ সালে আইন করে বিচার করতে পারেননি। আপনি ৯৬ সালে করেননি। এবারো পারবেন না।” বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।‘বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা: বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক ফোরাম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবদুল্লাহিল মাসুদ।

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “দেশ মারাত্মক সংকটের মুখোমুখি। দুর্নীতি আর দুশাসনের কারণে শুধু পদ্মাসেতুর অর্থায়নই নয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও সহায়তা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।”তিনি বলেন, “১৯৭৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান আইন পাস করার পর ৭৪ ও ৭৫ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত একমাত্র চিফ প্রসিকিউটর ছাড়া আর কাউকে নিয়োগ দিতে পারেননি। শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেয়ার পর এই বিচার তার পক্ষে করা সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, “৯১ সালে বদরুল হায়দার চৌধুরীকে ভোট দিতে শেখ হাসিনা গোলাম আযমের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও বিচার করেননি। আজ যদি জামায়াত বিএনপির সঙ্গে না থেকে তাদের সঙ্গে থাকতো তাহলে কার বিচার করতেন? জামায়াতের একমাত্র অপরাধ তারা আপনার সঙ্গে না থেকে বিএনপির সঙ্গে এসেছে।”

ব্যরিস্টার রফিকুল বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য এই জাতীয় ট্রাইব্যুনাল লাগে না। আমাদের ফৌজদারি আইন ফলো করে এই বিচার করা যায়। বিএনপি কখনো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে নয়। তবে বিএনপি সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চায়।”তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে যুদ্ধ করতে হবে।” তিনি এই যুদ্ধে সবাইকে অংশ নেয়ার আহবান জানান। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, “ফাঁসির আদেশ পৃথিবীতে হয় না। আসমান থেকে হয়।” অনেক আগেই নিজামী, সাঈদী ও সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ হয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “এদের ফাঁসি দেবেন আর এদেশের মানুষ তা চেয়ে দেখবে তা হবে না। বিচার করতে হলে পাঁচটি মহাদেশ থেকে ১৫ জন বিচারক আনুন অথবা হেগে নিয়ে যান, সেখানে বিচার করেন। অন্যথায় যদি বিচার করতে চান তাহলে দেশ ও জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবেন।”সালাউদ্দিন কাদের স্ত্রীর উদ্দেশে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “আপনি নিশ্চিত থাকেন, এই ট্রাইবুন্যাল বিচার করতে পারবে না। বাংলাদেশে মানুষ এই বিচার মেনে নেবে না। এদেশের হাজার হাজার মানুষ আপনার পাশে আছে।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে যত যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে, সেগুলোতে আমরা দেখেছি, আসামিকে ধরার পরের দিনই চার্জ গঠন করা হয়। আমরা দেখলাম গত ১৮ মাসেও একমাত্র সাঈদী ছাড়া অন্য কারো বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করতে পারেনি। ইকোনোমিস্ট পত্রিকাও লিখেছে, রাজনৈতিক কারণেই এই বিচার সামনে আনা হয়েছে।”অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক সিকদার, মেজর অব. হানিফ প্রমুখ।

 

 

Free Web Hosting